মধু এক বিচিত্র প্রাকৃতিক উপাদান। ফুলের মধ্যে থাকা মধু মূলত সংগ্রহ করে মৌমাছির দল। নিজেদের প্রয়োজনে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছির দল জড়ো করে মৌচাকে। তবে ফুল থেকে আনা একেবারে তরল টাটকা মধুর সঙ্গে মিশে যায় তাদের শরীর নির্গত কিছু যৌগ, উৎসেচক। তারপর সেই মৌচাক ভেঙে নিয়ে মধু সংগ্রহ করা হয়।সারাদেশে সুন্দরবনের মধুর অনেক চাহিদা রয়েছে। খাঁটি, প্রাকৃতিক মধুর অনেক গুণ। নিয়মিত মধু খেলে শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন হতে পারে। এবার তাহলে মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-

১. হালকা সর্দি-কাশিতে তুলসীপাতার সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। সামান্য গরম পানিতে মধু মিশিয়ে খেলে কাশির প্রকোপ কয়েকদিনেই কমে যায়। তবে এক বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের কখনো মধু খাওয়াবেন না। মধুতে থাকা ক্লস্ট্রিডিয়াম বটুলিনাম নামের রেণু থাকে। এ উপাদানটি বয়স্ক মানুষদের অন্ত্রে বংশবিস্তার করতে পারে না কিন্তু বাচ্চাদের পেটে বেড়ে উঠে বিষক্রিয়া তৈরি করার সম্ভাবনা থাকে।

২. সাধারণত শীতে পোড়া ও কাটাছেরা ঠিক হতে সময় নেয় অনেক। মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে। এসব উপাদান মানবদেহের ক্ষত, পোড়া ও কাঁটা জায়গায় ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। শরীরের কোথাও পুড়ে বা কেটে গেলে সেখানে সঙ্গে সঙ্গে মধুর পাতলা একটি প্রলেপ দিন। এতে করে ব্যথা কমবে এবং দ্রুত নিরাময় হবে।

৩. শীতে ঠাণ্ডাজনিত কারণে অনেকেরই শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয়। এমন সমস্যায় মধুর ভূমিকা অপরিসীম। কেননা, মধুতে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অনেক কার্যকরী। চা কিংবা উষ্ণ পানির সঙ্গে মধু ভালো করে মিশিয়ে নিয়মিত পান করলে কয়েকদিনের মধ্যে আপনি নিজেই ফলাফল পাবেন।

৪. গ্যাস্ট্রিক-আলসারের ক্ষেত্রে মধু উপকারী। ১০০ গ্রাম কুসুম গরম পানিতে এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার আসে। এছাড়াও রাতে ঘুমানোর ঘণ্টা দুয়েক আগে কুসুম গরম পানিতে একটু মধু মিশিয়ে খেলে ঘুম অনেক ভালো হয়।

৫. শীতকালে ঠোঁট ফাটা নতুন কিছু নয়। প্রায় সকলেরই ঠোঁট ফেটে যায়। এমনও অনেক মানুষ আছে যাদের ঠোঁট ফেটে রক্ত পড়তে থাকে। আশ্চর্যের ব্যাপার হল রাতে ঘুমানোর আগে নিয়মিত ঠোঁটে মধুর প্রলেপ লাগালে ঠোঁটের ওপরের শুষ্ক ত্বক দূর করে। এতে ঠোঁট নরম থাকে এবং ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এমনকি ঠোঁটের সৌন্দর্য্যও বৃদ্ধি পায়।

৬. কাঁচা মধুতে থাকা এনজাইম এবং চুলের জন্য পুষ্টিকর। চুলে নিয়মিত ব্যবহারের ফলে নিস্তেজ চুলকে চকচকে করে তুলে।

৭. অতিরিক্ত রোদের তাপে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। নিয়মিত মধু ব্যবহারের ফলে সূর্যের রশ্মি ত্বকের গভীর স্তরগুলোয় হাইড্রেশন পুনরুদ্ধার করে। অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক সুন্দর হয়ে ওঠে।